Tuesday, November 20, 2007

আমার মতো পাগোল প্রায়!

এখানকার সবকিছুই সবুজ। আমার শৈশোব সবুজ, আমার প্রেম সবুজ, আমার ভাঙ্গচুড় স্বপ্নেরা সবুজ। সবুজের বুক ছিঁড়ে যোগ চিহ্নের মতো দুটো রেখা চলে গেছে দুইদিকে চারটি গ্রামকে বিভক্ত করে। এই মিলনস্থলে বছর দুয়েক আগেও কিছু ছিলো না। ফসলের মাঠ আর নি:সঙ্গ এক ছোট ব্রীজ ছাড়া। বর্তমানে বসতবাড়ি গজিয়ে আমাদের ছোট বেলার স্বপ্নবুনার সেই আড্ডাটাকে মেরে ফেলেছে। ব্রীজে পা ঝুলিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সূর্য্য ডোবা দেখাটা আর ফিরে পাবোনা কোনোদিন। কতো নিষ্ঠুর ভাবে সবকিছু বদলে যায়...।

-- দে
গভির হুংকারে চমকে উঠি খুব। কাছেই দাঁড়িওয়ালা এক লোক বসে আছে। আমি তার দিকে এগিয়ে যাই, কাঁধে ঝোলানো ক্যামটা হাতে নিয়ে টিউন করতে করতে প্রশ্ন করি- 'কি দেবো?' সে কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়। চোখের তারা ব্যতিত অন্য কোথাও সেটা দেখা যাচ্ছে না। মুখটা ভাবলেশহীন। আমার এগিয়ে যাওয়াটা তার কাছে প্রত্যাশিত না সেটা বুঝা যাচ্ছে। গম্ভির শব্দটা হঠাৎ করে নিচু হয়ে যায়, 'পাঁচ টাকা'। উহু কথার ধারটা একটুও কমেনি।

-- কেনো দেবো পাঁচ টাকা, চোখে আমার কৌতুক ঝরে। সে চুপ হয়ে যায় হঠাৎ। এর মধ্যে দুটো ছবি তুলে ফেলেছি। তার পকেটে ৩/৪টা কলম দেখা যাচ্ছে। 'এই কলম দিয়ে কি করা হয়?' সে নিরুত্তর থাকে। 'ঠিক আছে। পাঁচ টাকা দিতে পারি যদি বলেন এই পাঁচ টাকা দিয়ে কি করবেন।' সে কিছুক্ষন আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। চোখ না নামিয়েই বলে- 'লাগবো না'। আমি ক্যামটা ফের কাঁধে ঝুলিয়ে সামনের গ্রামের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি। এ পাগোল না। আবার স্বাভাবিক মানুষও না। অনেকটা যেন আমারই মতোন। হা হা হা। ওয়েট, একটা প্রশ্ন, সে খেলছেটা কার সাথে? আই ডোন্ট নো, আই ডোন্ট নো। অনেক ঋণ নেই বেটার। ঋণী থাকলে পাগোল হবার মজাটা টের পেতে সাধু! নি:শব্দে হাসতে থাকি লাগামহীন। ঠোঁট, চোখ, মুখ, ছায়া, সবখানেই অজানা এক উল্লাস। কেনো এতো উল্লাস আজ? উহু... অসুস্থ্য মরিচিকারা তা জানেনা। জানবেনা কোনোদিন।

No comments: