Friday, November 2, 2007

যন্ত্রণা

'গ্যাস আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটা একদিন ফুরিয়ে যাবে। তাই অযথা চুলা জ্বালিয়ে রাখা ঠিক না। একটা ম্যাচকাঠী বাঁচানোর জন্য উনুন জ্বালিয়ে রাখা ঠিক না।' সকালেই উপদেশটা শুনলাম ৩ বার। যিনি বললেন বয়সের দিক থেকে তিনি সেঞ্চুরীর পথে। আমি নিজেও উপদেশটা বার কয়েক রিপিট করলাম, বাকিদের শুনালাম ভঙ্গী নকল করে। নকল করা সহজ, একহাত কোমরে রাখতে হবে, ঠোঁট দুটো টিয়া পাখির মতো সরু আর নাকটা কুঁচকে বলতে হবে। অ্যাঁ... গ্যাঁস আঁমাদের জাঁতীয় সঁম্পদ। এঁটা এঁকদিন ফুঁরিয়ে যাঁবে। টাই অঁযথা চুঁলা জ্বালিয়ে রাঁখা ঠিঁক না। এঁকটা ম্যাছকাঁঠী বাঁচানোর জন্য উঁনুন জ্বালিয়ে রাঁখা ঠিঁক না।"

নকলটা ভালো হয়েছে তা বেশ ভালো বুঝা যায়। যিনি শুনেছেন তিনি আঁচলে মুখ ঢেকে হেসেছেন। এদিকে আমার এক চোখ ট্যারা হয়ে গেছে নকলের ঠেলায়। হায় আগেতো চিন্তা করি নাই, দেখিও নাই। দাদী আমার মাশাল্লাহ সুন্দর। শুধু নাকটা একটু বোচা। বোচা নাঁকিরা নাকি হাঁদা হয়। দাদীকে দেখলে অবশ্য এর সত্যতা টের পাওয়া যায়।

আঁমাকে তিনি নতুন হাওয়াই ফ্যান কিনে দিবেন। পুরানটায় বাঁতাস কম দেয়। মনে মনে ভাবি, হায় তুমি যদি শীতের আগে আসিতে!
'এ জিনিস মাথার উপর পড়লে আমি নির্ঘাত মারা যাবো।'
'জগত ছেড়ে সবাইকে চলে যেতে হবে। আমাকেও যেতে হবে, তোকেও যেতে হবে'
'কো...কোথায় যাবেন?'
' সররর তুই জানিসনা মৃত্যুর পর মানুষ কোথায় যায়? তিনি আমাকে সরিয়ে মেহেদী গাছের পাতা থেকে ধুলো ঝাড়ছেন।
' কখনো ঐখানে যাই নাই, তবে আপনার এতো তাড়াতাড়ি সেখানে যাওয়া উচিৎ হবে না’
' কেন?'
'ফ্যান কে কিনে দেবে?' হো হো হো আমি বুড়ির পেছনে নৈ:শব্দিক উল্লাস করি। ঝানতাম না আমি ডান্স পারি!

সকালেই বুড়ি ঘুম ভাঙ্গাচ্ছেন ইদানিং। মুখ-চোখ-ভ্রু কুঁচকে ভাবি এ বুড়ি ছাদে উঠে ক্যামনে :(( প্রতিদিন সকালে এমন উটকো ঝামেলা, জানটার উপর ইদানিং খুব অনৈতিক হামলা চলছে।

No comments: