Thursday, January 24, 2008

বিশুদ্ধ জ্বালতন

আজকের দিনটা ভালোনা। ভিষন মন খারাপীয় একটা দিন। এদিনে কি করতে ভালো লাগে? জানিনা। এসব জানতে এখন আর ইচ্ছে করেনা। সকালে শ্রাবনী কিলঘুষি দিয়ে উঠিয়েছে যদিও, ফের ঘুমিয়ে যখন উঠলাম তখন সকাল ১১টা। জানলার বাইরের আলো দেখে মনে হলোনা সকাল। দরোজা খুলে ছাদে এসে দেখি বৃষ্টি কণা! চোখে, মুখে, অস্তিত্বে ঘুম লেপ্টে থাকায় ভাবলাম ভুল দেখছি কিন্তু শরীর জুড়ে বৃষ্টির ঝাপটা লাগতেই বিভ্রম কেটে যায়। তড়িগড়ি ফ্রেস হলাম। ড্রয়ার, ব্যাগ ঘেটেও মানিঅডার ফর্ম খুঁজে পেলাম না। আজ বৃহ:স্পতিবার খেয়াল আছে, পোষ্ট অফিস যেতে হবে সেটাও। পিসি বন্ধ করে ফ্লোরের এক কোনায় পড়ে থাকা ব্যাগটার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে ক্ষনিক দম নিলাম। ভাল্লাগছে না একদম।

পোষ্ট অফিস থেকে বের হয়ে সিদ্ধান্ত যা নেবার নিলাম। কয়েকটা দিন আমার সবকিছু থেকে মুক্তি চাই। ব্যাস। ইদানিং অদ্ভুত সব শব্দ মাথায় ঘোরপাক খাচ্ছে। কেন তারা আসছে জানিনা। এইযে এখন একটা শব্দ বাজছে কানে, ধোলাইখাল! কেন এই অদ্ভুত শব্দটা মাথায় ঘুরছে জানিনা। তবে জানতে হবেই তেমনও কোনো উচ্ছ্বাশাও নাই। ধোলাইখালের রাস্তাঘাট ভুলে গেছি। তবে মনে আছে ওখানে সব জিনিসপত্রকে নিমিষেই বদলে দেয়া যায়। একটা ট্রাককে পাঁচ মিনিটে ভ্যানিস করে দেয়া যায়। দশ মিনিটেই উড়োজাহাজকে দু চাক্কার সাইকেল বানিয়ে দেয়া যায়!


মানুষওতো একটা যন্ত্র তাই না? ধোলাইখালে মানুষ নামক যন্ত্রটাকে মেরামত করে কিনা জানা নাই। করলে বেশ হতো। গিয়ে অর্ডার দেয়ার যেত খুব, এই যে, শুনেন- এইযে আমাকে দেখছেন, এই আমার ভেতর থেকে কেজি খানেক দু:খ বের করে এক পোয়া ওজনের সুখ ভরে দিন। অথবা। আমার মাথার ভেতর ইগো নামক এক মহা বদ লোক লুকিয়ে আছে ঐ ব্যাটাকে বের করে দিন চটজলদি।


তারপর? প্রশ্নই আসেনা। কে নিতে চায় আমার জমাট দু:খের দায়ভার?


ভাল্লাগছে না এই আমাকেই। আপাতত হাওয়া হতে চাই কয়েকদিন সবকিছু থেকে। কিন্তু কোন পথ দিয়ে পালিয়ে যাওয়াটা সহজ?

Monday, January 21, 2008

মানষের স্বপন ঘুনে ধরা বৈঠা যেন...

পরাজিত আমি। বহু কসরত করেও নিজের জীবনটাকে সাজাতে পারলাম না। কিছুতেই কিছু হলো না। অলৌকিকতায় বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে খুব। কিন্তু অবিশ্বাসের মরচে পড়া দাগ সেখানেও লেপ্টে গেছে। কিছুতেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। ধ্বসে গেলাম। নিঃশেষ হলাম। জানতাম, এমন একদিন আসবে যেদিন কান্নার সময়টুকুও পাবোনা। দরোজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে ‘সময়’ আজ।

ভিষন মায়াপাগল আমি। অথচ চিরটাকাল একা থেকে গেলাম। এর কারণ একটাই বেখেয়ালীপনা। কতোশতো ভাবে চেষ্টা ফিকির করেও নিজের এই বিদঘুটে স্বভাবটার পরির্বতন ঘটাতে পারলাম না। প্রিয় মানুষকে হারানোর মাঝেও যে কষ্ট পাইনি সে কষ্টটা আজ পেলাম। কতোযে না বলা কষ্ট... পাগল করে তুলছে আমায়। দিনরাত। অবিরত। আমি বলতে চাই, বলতে চাই এমন কিছু যা কোনোদিন কাউকে বলতে পারিনি।

আজ সংসার আমার কাছে কিছু চাইছে। সময় এসেছে একে কিছু দেবার। নিজের জীবনটাকে যেমন ইচ্ছে তেমন করার নাটাইটা এখন থেকে আর আমার কাছে থাকছে না। প্রতিদান বলছে কানে কানে ‘স্বপ্নদের ভুলে যাবার মৌসুম এসেছে তোমার। ভুলে যাও। ভুলে যাও’। প্রচন্ড রকম এলোমেলো হয়ে গেলাম। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির ঝোলায় শূণ্য অবদান। জীবনটা নিয়ে এখন আর তেমন কোনো উচ্ছ্বাশা নেই আমার। শুধু একটা অতৃপ্তি, কাগুজের স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত হলাম। নামের আগে পদবী থাকার সম্ভাবনাটা নেই একেবারেই। ভালো লাগছেনা। ভিষন, ভিষন কাঁদতে ইচ্ছে করছে।

Friday, January 18, 2008

ছাগলের শিং

কিছুই ভালো লাগছে না। আমি নি:শেষ হয়ে গেলাম। আমার দ্বারা কিচ্ছু হবেনা। আমি একটা ঘোড়ার ডিম। ছাগলের শিং।

Monday, January 14, 2008

একবার এসে দ্যাখো আমায়...

১.

পাঁচটা টেস্ট করিয়েও রোগের নেজ খুঁজে পাওয়া গেলনা। ডাক্তারের সাথে কথোপকথনটা আমার বরাবর মজাদার হয়। আজকে হলো না।

ডা: ইদানিং কি করছো তুমি?

আ: কিছু করা হয়ে উঠছে না আসলে। কিছুই তেমন করছি না।
ডা: টেনশন করো?
আ: তেমন জোরালো টেনশন করিনা।
ডা: আমার ধারনা ছিলো তোমার টাইপয়েড হয়েছে। রিপোর্ট বলছে ভিন্ন কথা। তোমার কিছুই হয়নি।
আ: রিপোর্টে কি ভুল থাকতে পারেনা?
ডা: তোমার সমস্যাটা আবার খুলে বলো।
আ: রাতে দেরী করে ঘুম হয়। যখনই ঘুমাই তার কয়েক ঘন্টা পর জেগে উঠতে হয়। গায়ে প্রচন্ড জ্বর থাকে, একই সাথে মাথা ধরা, মাঝে মাঝে সর্দি। দিনের বেলায় শরীর গরম থাকে, মাথা ভার থাকে।
ডা: জ্বরের কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছিনা।

ডাক্তার মাথা ঝাঁকালেন। খচখচ করে কাগজে কিছু লিখে দিলেন, বললেন, দ্রুত কোনো কাজে কম্মে লেগে যাও। আর এই ঔষুধ দুটো প্রতি রাতে ১টা করে মোট পনেরো দিন খাবে। এরপর খাওয়া লাগবে না!

ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসার সাথে সাথে বুক ফুড়ে নিরবে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। আমি টেনশন করি নাকি? কই, তেমন টেনশনতো করিনা। ধুর ছাই আমার মাথা-টাথা গেছে। কি যে এক ঘোড়ারোগ হলো আমার। ঈশ্বর.....।


২.


রোদে বসে গিটার নিয়ে টুং টাং করছি। কিছুক্ষন পর জননী ছাদে উঠে এলেন, বললেন- শিক্ষিত ছেলেরা এসব করে? আয় খেতে আয়। আমি কিছু বললাম না। কেবল হাসলাম।

: পাগল হয়েছিস?
: মুচকি হেসে মাথা নাড়াই

মা কাছে এসে চুলে হাত বুলান। ঠিক করে দেন। তারপর, বসে থাকেন যক্ষ বুড়ির মতোন। আমি তার ভেতরের অবস্থাটা বেশ বুঝতে পারছি। তবু, উঠে যাই অকারনে। মায়া বাড়ানো ঠিক না।


৩.

গান বাজাচ্ছি, গিটারে, যাত্রীর গান। আমার প্রিয় গান।

--> ভেবেছি তাই এবার যা কিছু হবে হবার
ভুল তবু করি স্বীকার
পরাজয় মেনে নিয়ে সব কিছু ভুলে গিয়ে
চাইবো আমার অধিকার
কপালে যা আছে লেখা, মনে যদি পাই-ও ব্যাথা
দ্যাখে নেবো আমার এর শেষ
মিথ্যে অভিনয় আর নয়, আর নয়
এই ভালো আছি এই বেশ...

মন... আঁধারের নীলিমায় তোমাকেই আজ খুঁজতে চায়
জানিনা কোথায় তোমায় পাবো তোমায়
একবার এসে দ্যাখো আমায়...।


৪।

হঠাৎ আদম হাওয়ার কথা মনে পড়ছে। আদম কি কখনো হাওয়াকে সন্দেহ করতো? করতো না। আমিও করতাম না। তাই বলে আমি আদম নই। আদম ভালো ছিলো। বছরের পর বছর ব্যাটায় হাওয়াকে পাবার জন্য কান্না-কাটি করেছিলো...। আমি পারিনা কেনো? আমার দ্বারা আসলে কিছু হয়না। হবেনা। আমার এখন এটাও মনে পড়ছে যে, আমার প্রচুর ঈর্ষা ছিলো। একসময়। এখন সেটা নেই ক্যানো? আমার এও মনে পড়ছে যে একসময় আমি তোকে খুব ভালোবাসতাম, এখন তোকে ভালোবাসি নাকি ঘৃনাবাসি সেটা বুঝতে পারছিনা কেনো? নাহ আমার মাথা পুরা আউলা হয়ে গেছে। আমি নি:শেষ হয়ে যাচ্ছি, তবু আগের মতো করে তোকে সব বলতে পারছি না...? একবার এসে দ্যাখে যাবি আমায়? চোখে মুখে গরম নিশ্বাস ঢেলে বলবি- ভালোবাসিস তুই আমায় সবচে বেশি!