Monday, December 17, 2007

আঁচলে তার অপেক্ষা খেলে

নদিকে দু'ভাগ করে তিরতির করে ছুটে চলছে যলযান। চলছে ছুটে আমার যাবতীয় যতোসব স্থাবর অস্থাবর যন্ত্রণা। উদাসী হলেম আজ। নতুন করে। নদি আমার প্রিয়জন। এর কাছে আবদার চাইতে আমার জড় লাগেনা। যখন ইচ্ছে তখন এতে আমি কল্পনার বসতি গড়ি। ভাঙ্গি। চুড়ি। যেমন ইচ্ছে তেমন গড়ি। এ আমার একান্ত আপনজন। একে দুর্গত করলে আমার ইগো ফুটো হয়না।

গুটগুটে অন্ধকার, চারপাশ। লক্ষ লক্ষ তারা আকাশে। শতো শতো ছেঁড়া তারার ভেলকি ঝলক দেখিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। বহুদূরে মিটমিট করে জ্বলছে ঝাপসা লোকালয়। দুভাগ হবার আগে শুভ্র ফেনা তুলে জলকনা নদিকে আলোড়িত করছে অদ্ভুতুড়ে আবেগের ত্রাস সৃষ্টি করে। যেন বলছে কোনো অনাহুত, নদিকে, প্রিয়তমা নি:শেষ হয়ে যাচ্ছি দ্যাখো, নি:শেষ, এই তোমার পরে।

রাত সাড়ে বারো। লঞ্চের চারতলা ছাদে বসে আছি। একা। নি:স্ব। কনকনে শীত ঝরছে ইচ্ছেমতো। এক্স-হান্ড্রেড বেজে উঠে বিশ্রি রকম সুরে। জানি সে বাজবে। বাজবে। বাজবে। যতোক্ষন না ধরি। ভুলিনি, আজ তার জন্মদিন। কিছু কিছু জন্মদিন ভুলে যাওয়া সম্ভব না। মাঝে মাঝে অসম্ভব রকম অসহায় লাগে। আমি মানুষটা আদতে সুবিধের নই। অনেক অনেক ফাঁকিবাজি, রঙচঙ, কেরামতি, ফক্করবাজি, টক্করবাজি, লক্করবাজি, নক্করবাজি, যেন-তেন যত্তোসব ঝুটঝামেলায় ভরা আমার আমি। মানুষকে ঠকাইনা বড় গলায় ক্যামনে বলি? মানুষকে ঠকাচ্ছিতো।

আমার মটো বলে কিছু নেই। হোপলেস এই আমি জীবনের যতোসব রসকষে ডুবে ডুবে ভেসে যাই। স্থিতি কিংবা বসতি কিংবা সংসার, ধর্ম, কর্ম, নিজের জন্য টুকটাক ভাবনা... আমার দ্বারা হবেনা। এসব জেনেও একজন, শুধু অপেক্ষায় থাকে। তাকে এখন আর বুঝাই না। বলিনা- দ্যাখ রাতের সুপ্ত ছেঁড়া তারারাও হঠাৎ হঠাৎ ভেলকি দেখায়। আমি সেটাও পারিনা।

তারপরও তোর এই জন্মদিনে, তোকে কাঁদিয়ে ভাসালেও একটা কথা না বলার জন্য মনটা আপসোসে ভরে আছে...

সখি, তোর জন্যও কিছু ভালোবাসা ভরে আছে বেদুইইন এই আকাশে। তোকেও হঠাৎ হঠাৎ প্রচন্ডরকম ভালোবাসি।

: রাত ২:১৪ মিনিট, ১৪ ডিসেম্বর, ২০০৭ইং

: ডাইরীর পাতা থেকে।

1 comment:

Anonymous said...

shubho jonmo din/rat

manush ta ke ?