Monday, October 29, 2007

চলে যাচ্ছে দিন...

খুব অবষন্ন শরীর। ক্লান্ত আর পরিশ্রান্ত। তবে ঘন্টা খানেক শাওয়ারের সংগীত শুনে মনটা ফুরফুরে এখন। ফুরফুরে অলস মেছো বাঘ। উদম হয়ে গোসল করার বদ-স্বভাবটা কবে যাবে জানিনা, তবে এতে বিবাগী উল্লাস আর নিজেকে উৎসর্গ করার আত্মতৃপ্তি আছে। কাল গভীর রাতে ভাবলাম ব্লগিং করি, করা হয়ে উঠেনি। উইন্ডোজটা কেনযে খোলেনি তখন বুঝতে পারিনি, নিজের পিসি বলে কথা, প্রবলেম সপ্তাহের কোনো এক সময়ে ঠিকঠাক করি। গোসলটা সেরে খালি-গা নিয়ে পিসি অন করেই দেখি সবকিছু ঠিক ঠাক মত চলছে। অর্নবের 'রুপালি রৌদ' কে বাজিয়ে নিচে নেমে এলাম। অনেকদিন পর, অ-নে-ক দিন পর, দাদার লাইব্রেরীতে ঢু মারতে ইচ্ছে হলো। হালকা ময়লার আস্তর জমে আছে সেলফে, বইগুলোতে। শংকরের 'ছেলেবেলা' পড়তে ইচ্ছে করলো কিন্তু শেষে ওটার ধারে কাছেও গেলাম না। তসলিমা'র 'নিমন্ত্রণ'টা তুলে নিলাম। হাসি ফুটলো বাঁকা হয়ে। রেখে দিলাম জায়গা মত। জুলভার্নের এলাকায় এসে দেখলাম সবই পড়া। সমরেশ পড়তে ইচ্ছে হলো হঠাৎই। উত্তরাধিকারটা নিয়েও নিলাম না। সাতকাহনটা অনেক বার পড়বো পড়বো করেও পড়া হয়নি। আজ নিলাম, রুমে এসে সটাং শুয়ে পড়লাম। এবার হবে ম্যারাথোন বই পড়ার প্রতিযোগীতা। রাত ২টায় ১২৪ পৃষ্ঠা পর্যন্ত এগিয়ে আবিস্কার করলাম আমার ভ্রু কুঁচকে আছে। মেজাজটা হয়ে আছে খিটখিটে। গল্পের বই পড়তে বসলে আমি বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। গল্পের বই শুধু না, চটি থেকে পত্রিকা যা-ই পড়িনা কেন নাক-মুখ-মন ডুবিয়ে পড়ি। এসময় কেউ আমার পাশে বোম্বিং করলেও আমার কান অবদি সেটা পৌঁছাবে না।

সাতকাহন পড়ার আগ্রহ কমে গেছে, তাই এটাকে মাথার পাশে রেখে ঘুমিয়ে পড়াই শ্রেয়। সাতকাহনের মূল বিষয়বস্তু কি? একটা মেয়ে, যে কিনা ভবিষ্যতের কোনো এক চোরা পথে গিয়ে আধূনিকা নারী হবে! যে কিনা দুনিয়াদারি সম্পর্কে সব্বোজ্ঞানী হবে! যে কিনা সমাজের একটা ছেলে যা যা করে থাকে তা-ই করার চেষ্টা করে! লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠিত করবে! লেখকের গন্তব্য কি? অন্তত এটা জানার জন্য হলেও আমাকে সাতকাহন পড়তে হবে। হাঁ আমি জানি আমার ভ্রু কুঁচকে যাবে, আমি জানি আমার পক্ষে এ বই নূন্যতম ১৫ দিনেও শেষ করার সম্ভব না, তারপরও আমি এ বই পড়বো।

বন্ধুরা যখন ঈদের মার্কেটিং শেষে পুরান ঢাকায় ইফতারী করার অভিলাস নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে তখন আমি নীলক্ষেতে ৫ মিনিটের বিরতি নিয়ে একটা বই কিনেছিলাম। ঈদ মার্কেটিং! বইয়ের নামটা তেমন চমকপ্রদ না। তবে বিষয়বস্তু আর উপস্থাপনটাকে বলবো আমি, ব্রিলিয়ান্ট। হাঁ 'দা ভিঞ্চি কোডের' কথা বলছি। দারুন তৃপ্তি নিয়ে পড়েছি, কিন্তু শেষ করে বুঝলাম লেখক বেটায় সমঝোতা করে ফেলেছে। তিনি মোটেও তার সততা শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে পারেননি। একে আমি খাটো করবো না, কারণ পাঠকদের আঁটকে রাখার দারুন কৌশল আর বিষয়বস্তু এতে বন্দি আছে, কিন্তু আমার কেন জানি এ বই এখন ভালো লাগছে না। এ আমি দ্বিতীয়বার পড়বো না মোটেও।

No comments: